বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনের ফলে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় আজ সোমবার বিকেলে নগর ভবনের সম্মেলণ কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মেয়র আহসান হাবিব কামাল।
এসময় তিনি বলেছেন, সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কোনো ক্রমেই আন্দোলন করা যায় না। তবে তারা নিয়ম ভেঙ্গে আন্দোলনে নেমেছে। যারা নগরবাসীর সমস্যা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারি। তবে ব্যবস্থা নিলেই আবার নতুন করে ঝামেলার উৎপাত হবে।
তিনি আরো বলেন, সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রেখেই চেয়ার ছাড়েন। এরপর আমি মেয়র থাকাকালীণ সময় দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কর্পোরেশনের যে আয় রয়েছে তাতে আমরা কর্পোরেশনের জন্য ১১’শ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন নিয়মিত ভাবে পরিশোধ করতে পারব। তবে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে স্টাফ রয়েছে প্রায় ২২’শ। যাদের বেতন পরিশোধ করা খুবই কষ্টকর। তবুও আমরা বলেছি জুন মাসের মধ্যে তাদের সকল বকেয়া পরিশোধ করে দেয়া হবে কিন্তু তারা সেই সকল বকেয়া ১ মাসের মধ্যেই দিতে বলছে। এটা কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের পক্ষে সম্ভব নয়। এর আগে যে তারা আন্দোলনে নেমেছিল সেই সময় আলোচনায় যে কথা তারা মেনে নিয়েছিল এখন সেই কথাই তারা না মেনে অহেতুক আন্দোলনে নেমেছে।
মেয়র আহসান হাবিব কামাল বলেন, আমরা পরিচ্ছন্ন কর্মীদের বকেয়া বেতন দিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু গুটি কয়েক আন্দোলনরত নেতা পরিচ্ছন্ন কর্মীদের বেতন নিতে দেয়নি। কর্পোরেশনের উন্নয়নের জন্য ৩০জন কাউন্সিলর এবং আমি মেয়রও ১ বছর যাবৎ সম্মানী ভাতা নেয়নি। সেখানে অদৃশ্য হাতের জোড়ে কর্পোরেশন অচল করে দেওয়া নগরবাসীকে ভোগান্তিতে ফেলা ছাড়া আর কিছুই নয়। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন যাতে ভালো ভাবে চলে সেই লক্ষ্যে উন্নয়ন খাত থেকে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিয়ে বেতনাদী দেয়া হয়েছে। এখন তারা টের পেয়েছে কর্পোরেশনের একাউন্টে ২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা এসেছে। এখন সেখান থেকে তাদের বেতনাদী পরিশোধের দাবী জানানো হচ্ছে। তবে যে টাকা এসেছে সেটা এসেছে ১৫ই আগস্ট ঘাতকের গুলিতে নিহত স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর শিশু সন্তান সুকান্ত বাবু’র নামে শিশু পার্ক করার জন্য। তারা এটা জানার পরও ওই খাত থেকে টাকা চাচ্ছে। এই আন্দোলনে নগরবাসীর ক্ষতি হচ্ছে বলে আন্দোলনকারীদের বলা হলেও তারা আমাদের বলেছে ক্ষতি করার জন্য আন্দোলন করা হচ্ছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র আহসান হাবিব কামাল বলেন, বিগত দিনের সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ার, শওকত হোসেন হিরণ অস্থায়ী বা স্থায়ী অনেক লোকের প্রবেশ ঘটিয়েছে কর্পোরেশনে। শুধু মেয়র হিরণই প্রায় সাড়ে ৮’শ স্টাফ ঢুকিয়েছেন কর্পোরেশনের মধ্যে। অতিরিক্ত লোকবলই বিসিসির সমস্যা। এখন ১২ কোটি টাকা হলেই এই সমস্যা নিরসন করা সম্ভব।
সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল মেয়র এ কে এম শহীদুল্লাহ জানান, সিটিতে আমাদের ১২ কোটি ট্যাক্স বকেয়া রয়েছে। যা এই কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই উত্তলোন করতে পারছেন না। এই ট্যাক্স উত্তোলণ করতে পারলে বেতন বকেয়া পরিশোধ করা সম্ভব হবে। এছাড়া আমরা স্থায়ীভাবে কর্পোরেশনের জন্য ১১’শ জনকে চেয়েছি। সেটা মন্ত্রনালয় থেকে পাশ হয়ে আসলে বাকিদের ছাটাই করলেই সমস্যার সমাধাণ হবে। সংবাদ সম্মেলনে কর্পোরেশনের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।