তানজীল শুভ:
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মানাধীন হাসপাতাল ভবনের পঞ্চমতলা থেকে পড়ে গিয়ে দুই শ্রমিক গুরুতর হয়েছে। তাদেরকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ডাক্তার সুমন (২৫) কে মৃত ঘোষণা করে।
বুধবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আহত এবং মৃত শ্রমিকদয় হলো- চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা কবির (৩০) ও সুমন (২৫)। অভিযোগ উঠেছে গনপূর্ত বিভাগ ও ঠিকাদারের অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিত নির্মান কাজের কারনেই ওই দুই শ্রমিক পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী শেবাচিম হাসপাতালের নির্মানাধীন মর্ডানাইজেশন এন্ড এক্সটেনশন ভবনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রহরী মাঈনুল জানান, ভবনের উত্তর পাশে পঞ্চম তলায় বহিরাংশে নির্মান কাজ চলছিলো। এসময় হঠাৎ করেই চিকিৎসার এবং শব্দ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ওই শ্রমিককে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
তখন সাইড কন্ট্রাকটার এর দায়িত্বে থাকা মাঈনুল সহ অন্যান্যরা এসে ওই দু’জনকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। ভবনের শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে বর্ধিত ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ ছিলো। সম্প্রতি ওই ভবনে নতুন করে নির্মান কাজ শুরু হয়েছে। বাজার রোড এলাকার ব্যবসায়ী ফরহাদ এর মালিকানাধীন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কহিনুর এন্টারপ্রাইজ এর নামে কাজ করছে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরীর ছেলে।
কিন্তু নির্মান কাজের শুরু থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের আশয় নিচ্ছে। বিল্ডিং ডিজাইন কোর্ট এবং শ্রমিক আইন উপেক্ষা করেই চলঝে ঝুকিপূর্ন ইমরাত নির্মান। কিন্তু বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে না নগপূর্ব বিভাগ। এ কারনেই দুই শ্রমিক এক মৃত্যুর মুখে বলে অভিযোগ সাধারণ শ্রমিকদের। তারা জানান, ভবনের বহিরাংশে পলেস্তরা কিংবা অন্য কোন কাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা প্রটেকশনের ব্যবস্থা করার বিধান রয়েছে। কিন্তু তা করা হয়নি। বরং পুরানো বাঁশ বেধে তার উপর বাঁশের চেড়া দিয়ে চালি বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। তার উপরে দাড়িয়েই কাজ করতে হচ্ছে শ্রমিকদের। হঠাৎ করেই সেই বাঁশের নিচ থেকে ভেঙ্গে গেলে সেখানে দাড়িয়ে কাজ করা দুই শ্রমিক নিচে পড়ে যায়। এতে নিচ তলায় একাংশে বেরিয়ে থাকা লোহার রডে সমস্ত শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে দুই শ্রমিকের।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাস্থলে থাকা গনপূর্ত বিভাগের সাইড ইঞ্জিনিয়ার হুমায়ুন কবির বলেন, ইমারত নির্মানের ক্ষেত্রে অবশ্যই শ্রমিকের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। তবে আমি মঙ্গলবার এই সাইডে যোগ দিয়েছি। তাই বিষয়টি সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয়। পূর্বে থেকেই এমনি ভাবে নির্মান কাজ চলে আসছে বলে জানিয়েছেন তিনি।