অবশেষে দীর্ঘ কাঠখড় পুড়িয়ে ঐতিহ্যবাহী শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন দৈনিক আজকের পরিবর্তন ও দৈনিক কীর্তনখোলা পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক কাজী মিরাজ মাহামুদ। গত ২৪ ডিসেম্বর ঐতিহ্যবাহী শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাবের ২০২১ সালের নির্বাচনে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েও তিনি দায়িত্ব পাননি। প্রেস ক্লাবের ক্ষমতা হস্তান্তরের (পালাবদল) দিন মহামান্য হাই কোর্টের আদেশে শপথ অনুষ্ঠান স্থগিত হয়ে যায়। দীর্ঘ এক মাসের আইনি লড়াই শেষে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশে বৃহস্পতিবার নতুন কমিটির সভাপতি মু. ইসমাইল হোসেন নেগাবান মন্টু, সম্পাদক কাজী মিরাজ সহ ১৭ পদে বিজয়ী কার্যকরি পরিষদ দায়িত্ব গ্রহন করে। নব নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক কাজী মিরাজ সংবাদ পত্র অঙ্গনে জড়িত গত ২৮ বছর ধরে। কাজী মিরাজের সাংবাদিকতায় হাতে খড়ি রনাঙ্গনের মুখপত্র বিপ্লবী বাংলাদেশ পত্রিকার মাধ্যমে ১৯৯২ সালে। এ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল আলম ফরিদ স্ব-স্নেহে তাকে সাংবাদিকতার সুযোগ করে দেন। সে সময়ে দৈনিক বিপ্লবী বাংলাদেশ পত্রিকায় সিনিয়র সাংবাদিক মানবেন্দ্র বটব্যাল, এসএম ইকবাল, প্রয়াত মিন্টু বসু, ইসমাইল হোসেন নেগাবান মন্টু, নজরুল ইসলাম চুন্নু, নাসিম উল আলম এবং মুরাদ আহমেদের একান্ত সহযোগিতায় হাটি হাটি পা পা করে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এর পরে দৈনিক গ্রাম সমাচার এবং দৈনিক আজকের বার্তায় দীর্ঘ ৫ বছর ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন। দৈনিক আজকের বার্তায় সে সময়ে বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন সাংবাদিক মুনির হোসেন। অত্যন্ত মেধাবী সাংবাদিক মুনির হোসেন তাকে নিজ হাতে সাংবাদিকতায় আদ্যোপান্ত শিখিয়েছেন। সে সময় মরহুম সাংবাদিক জিএম বাবর আলী, মুরাদ আহমেদ, তৌফিক মারুফ, কাজী মকবুল, গোপাল সরকার, পুলক চ্যাটার্জি, প্রিন্স মেজবাহ, জাকির হোসেন, ফিরদাউস সোহাগ, কাজী শামিম সহ নগরীর প্রথিতযশা সাংবাদিকদের সান্নিধ্যে কাজী মিরাজের সাংবাদিকতায় এবং মেধা মননে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়। এর পরে শুরু হয় নতুন পথ চলা। ১৯৯৯ সালে আধুনিক সাংবাদিকতার প্রথিকৃত প্রথিতযশা সাংবাদিক মাইনুল হাসানের সাথে দৈনিক ইত্তেফাকে এবং সে সময়কার দেশের আলোচিত পত্রিকা দৈনিক যুগান্তরে ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করে বরিশাল সহ সারা দেশে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেন। তৎকালীন যুগান্তর ব্যুরো চীফ ছিলেন আজকের চ্যানেল আই এর বরিশাল প্রতিনিধি শাহিনা আজমিন। সর্বশেষ জাতীয় দৈনিকের ফটো সাংবাদিক হিসেবে দেশের অন্যতম সম্পাদক মরহুম গোলাম সারওয়ারের সম্পাদনায় দৈনিক সমকালে কাজ করেন। সাংবাদিক কাজী মিরাজ ২০০৭ সালে বরিশাল থেকে প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক ভুইয়ার প্রকাশনায় দৈনিক মতবাদের হাল ধরেন। দৈনিক মতবাদে তখন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বর্তমানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বরিশালের দায়িত্বে থাকা মুরাদ আহমেদ। এছাড়া ছিলেন সালেহ টিটু, গোপাল সরকার, রাহাত খান, তাওহিদ সৌরভ, সাইদ মেমন, কাওসার হোসেন সহ একঝাক তরুন সাহসী সাংবাদিক। খুব অল্প সময়ে পত্রিকাটি পাঠক প্রিয় হয়। সেই সময়ে আপোষহীন দৈনিক হিসেবে মতবাদ বরিশাল বিভাগে সেরা পাঠক প্রিয় পত্রিকার মর্যাদা পায়। এছাড়া দৈনিক করতোয়া পত্রিকার ব্যুরো চীফ হিসেবেও দীর্ঘ দিন কাজ করেন সাংবাদিক কাজী মিরাজ। ২০১৩ সালে অক্টোবর মাসে দৈনিক আজকের পরিবর্তন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন কাজী মিরাজ। এর পর থেকেই সাংবাদিকতায় তার নতুন মাত্রা শুরু হয়। পরের বছর তিনি দৈনিক কীর্তনখোলা নামের আরেকটি পত্রিকার হাল ধরেন। দীর্ঘ সাংবাদিকতায় জীবনে তিনি শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক পদে একবার, এবং যুগ্ম সম্পাদক পদে তিন বার নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের নির্বাচনে সাধারন সম্পাদক পদে তিনি মাত্র দুই ভোটে পরাজিত হন। কিন্তু থেমে যাননি। তার অদম্য ইচ্ছা শক্তি, দৃঢ় প্রতিজ্ঞা এবং সাংবাদিকদের কল্যানে অবিরাম কাজ চালিয়ে যান। সর্বশেষ ২০২১ সালের শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাব নির্বাচনে সাধারন সম্পাদক পদে জয়ী হয়ে দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আরো একধাপ এগিয়ে যান। একান্ত সাক্ষাতকারে নব-নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক কাজী মিরাজ বলেন, সকল ভেদাভেদ ভুলে সাংবাদিকদের কল্যানে কাজ করে যেতে চাই। এ লক্ষে সবার সহযোগীতা পেলে ঐতিহ্যবাহী শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাবের উন্নয়নে তার শতভাগ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি প্রেস ক্লাবের সকল সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন