সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বেশি দামে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রির অভিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবুল খায়ের ট্রেডার্স নামের তেলের আড়ত সিলগালা করে দিয়েছে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শনিবার সকালে সেখানে অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।
তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত দাম ১৪৩ টাকা হলেও প্রতিষ্ঠানটি ১৭৩ থেকে ১৭৬ টাকায় খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করছিল। এমনকি তারা তেল কেনার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের রসিদ দেখাতে পারেনি।
মনজুর বলেন, ‘আমাদের এক প্রতিনিধি দোকানটিতে খুচরায় তেল কিনতে আসেন। তখন তারা ১৭৬ টাকা দাম চায়। ক্রেতা রসিদ চাইলে তারা জানায়, রশিদ দিয়ে মাল বিক্রি হবে না, নিলে নেন, না নিলে চলে যান। তারা সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে প্রতি লিটারে প্রায় ৩০ টাকা বেশিতে বিক্রি করছিল।
প্রতিষ্ঠানটিকে তাৎক্ষণিক জরিমানা করা হয়েছে এবং কারখানা সিলগালা করে দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে কি না, সেটা অধিদপ্তরের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
দোকানটিতে কমপক্ষে ৬০ ড্রাম তেল মজুত করা আছে বলে বলেন ওই কর্মকর্তা।
এভাবে দোকান সিলগালা করে দেয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে দোকানের মালিক বলেন, ‘আমরা ডিলারদের কাছ থেকে রসিদ দিয়ে মাল কিনতে পারছি না। আমাদের বলা হয় মাল নিলে নেন, না নিলে চলে যান; অনেক পাইকারি ক্রেতা আছেন। আপনার কাজ তেল বেচা, রসিদ দিয়ে আপনি কী করবেন?’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতি লিটার ১৭১ টাকা ৮৯ পয়সায় কিনে আনি। পাইকারিতে ১৭২ টাকা এবং খুচরা ১৭৩ থেকে ১৭৪ টাকা বিক্রি করি। আমাদের কি দোষ। দেশে তেল সাপ্লাই দেয় কয়টা প্রতিষ্ঠান, তা সবাই জানে। বড় জায়গায় ধরলে কোনো সমস্যা থাকবে না। আমাদের ধরে লাভ কি?’
ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীরা ১ মার্চ থেকে লিটারে সয়াবিন তেলের দাম ১২ টাকা বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাফ জানিয়ে দেন, রোজার আগে দাম বাড়বে না। তিনি আন্তর্জাতিক বাজারের বাড়তি দামের উত্তাপ সহ্য করতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেন।
এর পরই ব্যবসায়ীরা বাজারে ভোজ্য তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। অবশ্য সরবরাহ কমানোর বিষয়টি রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলছেন, তাদের সরবরাহ আগের মতোই রয়েছে।
অবশ্য বাজারে সরবরাহ সংকট দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে দোকানিদের বিরুদ্ধে। এমনকি অনেকেই খোলা তেল বিক্রিও বন্ধ করে দিয়েছেন।