বরিশাল নগরীর আমিরকুটির এলাকায় নিজ ঘর থেকে দুই সন্তানের জননী সাহিদা বেগম নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্বামীর পক্ষ থেকে আত্মহত্যা বলে দাবি করা হয়েছে। তবে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এমনকি নিহত গৃহবধূর বুকে আঘাতের চিহ্নও খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। তার পরেও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ কি সে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিমুল করিম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ‘পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ইমরান হোসেন একই এলাকার বাসিন্দা শাহিদা বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের সংসাদের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এদের একজনের বয়স ছয় মাস এবং অপরজনের বয়স আড়াই বছর।
এদিকে, স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বরিশাল নগরীর ১৫নং ওয়ার্ডের আমিরকুটির এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন ইমরান হোসেন। পাশাপাশি স্থানীয় একটি মাদ্রাসা পরিচালনার পাশাপাশি শিক্ষকতা করছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ওই গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করেন নিহতের স্বামী। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের একটি টহল টিম মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ‘ইমরান হোসেনের দাবি অনুযায়ী তার স্ত্রী ঘরে ফ্যান ঝুলানো হুকের সাথে ওড়না বেধে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ঘরের মেঝে থেকে ফ্যানের হুকের উঁচ্চতা অনেক বেশি। যেখানে ওই গৃহবধূর পৌঁছানো খুব সহজ নয়। তাছাড়া পুলিশ গিয়ে গৃহবধূর মৃতদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পায়নি। মৃতদেহ মেঝেতে পেয়েছেন। তাই এটি আসলে আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা নিয়ে প্রশ্নের দানা বেদেছে স্থানীয়দের মাঝে।
তবে নিহত গৃহবধূর স্বামী ইমরান হোসেন বলেন, ‘রাতে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুমাতে যায় শাহিদা। আমি পাশের রুমে কিছু কাজ করতে ছিলাম। হঠাৎ একটা শব্দ শুনে রুমে গিয়ে দেখতে পাই সে গলায় ফাঁস দিয়েছে। এরপর আমার ডাক-চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা ছুটে আসে। আমাদের মধ্যে কোন ঝরনের ঝামেলা ছিলো না। তার পরেও শাহিদা কি কারণে এক কাজটি করলো সে বিষয়ে বোধগম্য নন বলে দাবি ইমরানের।
এদিকে, কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ‘নিহতের স্বামী শাহিদা আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করলেও সুরতহাল রিপোর্ট ঘটনার সন্দেহ বাড়িয়ে দিয়েছে। কেননা সুরতহাল রিপোর্টে গৃহবধূর বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাই ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, এটি হতা নাকি আত্মহত্যা তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত করা হচ্ছে। যেহেতু একই রুমের ভিতরে ঘটনা তাই সন্দেহ হচ্ছে। এটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও হতে পারে।