বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রীনিবাসের এক ছাত্রীকে মারধর ও বিছানাপত্রে অগ্নিসংযোগ করে ছাত্রীনিবাস থেকে বের করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ ছাত্রীরা। রোববার বিকাল সাড়ে ৫টায় ছাত্রীরা বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ফারজানা আক্তার ঝুমুরের বিছানাপত্র এনে ছাত্রীনিবাস সংলগ্ন নতুন বাজার সড়কে অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে দুপুরে ছাত্রীনিবাস থেকে ঝুমুরের বহিস্কারের দাবী করে কলেজ অধ্যক্ষর কাছে স্মারকলিপি দেয় তারা। এনিয়ে ছাত্রীনিবাসের উত্তেজনা সৃস্টি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঝুমুরকে নিয়ে ছাত্রীনিবাসে প্রবেশ করে। ছাত্রীদের উভয় গ্রুপ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
ঝুমুরের প্রতিপক্ষ গ্রুপের ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, ঝুমুর দীর্ঘদিন যাবত অন্যান্য ছাত্রীদের অনৈতিক কাজে জড়িত হতে চাপ প্রয়োগ করত। তার প্রস্তাবে রাজী না হলে সে ছাত্রীদের মারধর করে। এছাড়া ঝুমুর সাধারণ ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায়সহ ছাত্রীনিবাসে নৈরাজ্য সৃস্টি করতো। ঝুমুরের প্রতিপক্ষ গ্রুপ আরো জানায়, তার প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় গত ১ জানুয়ারি ২ নম্বর ভবনের ছাত্রী ঐশি ও ১৯ মার্চ শারমিনকে মারধর করেছে। ২০ নভেম্বর জান্নাত ও ইভা নামের দুই ছাত্রীকে মারধরের হুমকি দেয় সে। এসব অভিযোগ জানিয়ে রোববার দুপুরে ঝুমুরের বহিস্কারের দাবী করে কলেজ অধ্যক্ষ’র কাছে স্মারকলিপি দেন প্রতিপক্ষ গ্রুপের ছাত্রী শারমিন আক্তার, রহিমা আক্তার ইভা, ইসরাত জাহান, ফাতিমা, শাকিলা আক্তার ও মিষ্টি।
কলেজ অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে হোস্টেলে ঢুকে ফারজানা আক্তার ঝুমুরকে মারধর করে ও তার বিছানাপত্র পুড়িয়ে ফেলে প্রতিপক্ষরা। ফারজানার উপর হামলার খবরে বরিশাল কোতয়ালী থানা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার শাহানাজ পারভীন ও ওসি আওলাদ হোসেন মামুনসহ শতাধীক পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
পরে বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রী নিবাসে উভয়পক্ষকে নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে বসে পুলিশ ও কলেজ প্রশাসন।
ঘটনার বিষয়ে ছাত্রীনিবাসের তত্ত্বাবধায়ক সহকারী অধ্যাপক এসএম শাহ আলম বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রীনিবাসে দু’দল ছাত্রীর মধ্যে বিরোধ চলছে। এর জের ধরে রবিবার বিকালে ঝুমুরকে মারধর ও তার বিছানাপত্রে অগ্নিসংযোগ করে প্রতিপক্ষরা। পরে প্রশাসন ও কলেজ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান করা হয়।
ঘটনার বিষয়ে কোতয়ালী থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার সত্তরঞ্জন খাসকেল জানায়, বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রী নিবাসে ছাত্রীদের মধ্যে ঝামেলার সংবাদে থানার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে কলেজ প্রশাসনকে সমাধান করবে এমন আশসে ফিরে আসে পুলিশ কর্মকর্তারা।
ঘটনার বিষয়ে আহত ফারজানা আক্তার ঝুমুর জানায়, ছাত্রীরা হোস্টেলে বসে মাদক পান করে, আমি তার প্রতিবাদ করতে গেলে জান্নাত, ইভা, সারমিন ও ফাতেমা আমার উপর হামলা করে এবং আমার জামাকাপড় ও বিছানাপত্র রাস্তায় নিয়ে পুড়ে ফেলে। তিনি জানান, তার উপর হামলা করে তার কাছে থাকা একটি মোবাইল ফোন ও একটি চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তিনি আরও জানান, কলেজ প্রশাসন তাকে ২ থেকে ৩ দিনের জন্য হোস্টেলের বাহিরে থাকার জন্য বলে।