আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সব বয়সী মানুষের কেনাকাটার ধুম পড়েছে শপিংমল ও ফ্যাশন হাউজগুলোতে। তবে গরমের কারণে এবারের ঈদের কেনাকাটায় পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সুতির পোশাক।
রোববার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমল ও ফ্যাশন হাউজ ঘুরে দেখা গেছে, সব বয়সী ক্রেতার চাহিদার কথা বিবেচনা করেই সাজানো হয়েছে এবারের ঈদ কালেকশন। বয়স্কদের পোশাকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বয়স্ক পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি-পাজামা, ফতুয়া এবং বয়স্ক নারীদের জন্য শাড়ি, সালোয়ারসহ অন্যান্য পোশাক রয়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, গত দুই বছর তেমন বেচাকেনা হয়নি। এবার বিক্রি একটু ভালো। এখন সব বয়সী ক্রেতাই সুতির কাপড় বেশি কিনছেন। গরমের কারণেই সুতি কাপড়ে চাহিদা বেশি।
রাজধানী সুপার মার্কেটের পোশাক বিক্রেতা আজিজুল ইসলাম জানান, এখনো কেনাকাটা পুরোপুরি জমেনি। তবে দু-একদিনের মধ্যেই জমবে বলে আশা করছি। আমরা কাস্টমারের চাহিদা চিন্তা করে সুতির কাপড় বেশি তুলেছি। আর বয়স্করা তো এমনিতেই সুতি কাপড় বেশি পরেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য ভিন্নতা রয়েছে, তবে সে সংখ্যা খুবই কম। গরমে সুতি কাপড় সবার চাহিদার শীর্ষে থাকে।
ওয়ারী আউটলেটে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ঈদের পোশাক কিনতে এসেছেন শহিদুল ইসলাম (৬২)। ঈদের জন্য সাদা রঙের সুতির পাঞ্জাবি কিনেছেন। তিনি বলেন, আমি সবসময়ই সুতি কাপড়ের পোশাক পরতে পছন্দ করি। আর এখন যেহেতু গরম, তাই সুতি কাপড়েই আরাম বেশি। এ কারণে সুতির পাঞ্জাবি কিনেছি। সঙ্গেহ পাজামা আর লুঙ্গিও নিয়েছি। সাদা রঙের কাপড়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি, তাই সাদা রঙের পোশাকই নিলাম।
ফ্যাশন ডিজাইনার ও ফ্যাশন হাউজ রঙ-এর কর্ণধার বিপ্লব সাহা বলেন, ‘বয়স্করাও এখন সাদাকালো কাপড় পরতে চান না, তারাও রঙিন কাপড়ই পরেন। আগেকার দিনে হয়তো সাদা খুব পরতেন, কিন্তু এখন বয়স্ক নারীরাও রঙিন সালোয়ার-কামিজ পরছেন। বিশেষ করে তারা তরুণদের মতো করেই পোশাক পরতে পছন্দ করেন। তারপরও সাদা কাপড়ের প্রায়োরিটি আমরা দেই। সুতির কাপড়টাই বেশি পরছেন। যাদের বাজেট বেশি সেখানে দামি কটন হয়তো ব্যবহৃত হচ্ছে, পাঞ্জাবির ক্ষেত্রেও তাই। এবার তাঁতের শাড়ি এনেছি, সেটা সবাই কিনছে। সব বয়সের রং আছে সেই কাপড়ে। বাচ্চাদেরও বিশাল কালেকশন আছে। কিছু পাঞ্জাবি আছে যেটা বাবা, ছেলে ম্যাচ করে পরতে পারেন। মা-মেয়েও ম্যাচিং করে পরতে পারেন।
তিনি বলেন, ঈদের পোশাকে গরমকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হয়। আমাদের ক্রেতারা যে খুব বেশি জরি, চুমকিযুক্ত পোশাক পরছেন তা নয়। ক্রেতারা প্রথম প্রায়োরিটি দেন আরামটা, সেজন্য আমরা সুতির কাপর ব্যবহার করেছি। ঈদের দিনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অনেক সময় থাকে। দিনের বেলায় সুতি কাপড়টা প্রায়োরিটি দেই। সব বয়সী মানুষের পাঞ্জাবি, শাড়িসহ সব পোশাকেই কটনকে গুরুত্ব দেই। সন্ধ্যার পর হয়তো একটু গেট টুগেদার বা দেখা করার জন্য জমকালো কাপড় পরতে চান, সেক্ষেত্রে আমরা আরামদায়ক করার চেষ্টা করেছি। রঙের মাধ্যমে কিছু কাজ করেছি, সিম্পল কাজ, সেখানে হয়তো একটু এমব্রয়ডারি আছে। কিছু কাপড় আবার এমনিতেই অনেক সুন্দর, সেখানে বাড়তি কাজের প্রয়োজন হয় না। কেউ কেউ অর্নামেন্টেশন পছন্দ করে, সেক্ষেত্রে টাই অ্যান্ড ডাই, বাটিক, বিভিন্ন প্রিন্ট ব্যবহার করেছি।
সারা লাইফস্টাইলের ফ্যাশন হেড অব ডিজাইনার শামীম রহমান বলেন, ঈদে যেহেতু গরম থাকবে, তাই অন্যান্য বয়সীদের মতো বয়স্করাও কিন্তু সুতি কাপড় বেশি কিনছেন। আমরাও আমাদের কালেকশনে বয়স্কদের জন্য সুতি পোশাক এনেছি। বয়স্ক নারীদের জন্য শাড়ি, পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি আছে। পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে বয়স্কদের জন্য সাদা ও উজ্জ্বল রঙ রেখেছি, এটি তারা বেশি পছন্দ করেন। বয়স্কদের পোশাকে ভারী কোনো কাজ রাখা হয়নি। তাদের পোশাকে হালকা হাতের কাজ, ছোট প্রিন্ট রাখা হয়। পারপেল, পিংক কালারটাও বেশি চলে।