বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ডা. বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রী নিবাসে আবাসিক বাসিন্দা ৬ ছাত্রলীগ কর্মীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শফিকুর রহমান সিকদার শুক্রবার সকালের মধ্যে ওই ছাত্রীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় অন্যান্য আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ডা. বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রী নিবাসের আবাসিক বাসিন্দা কথিত ছাত্রলীগ নেতা ফারজানা আক্তার ঝুমুর। ছাত্রী নিবাস সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে অন্যান্য আবাসিক শিক্ষার্থীদের উপর মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করতো সে। অনেককে অনৈতিক কাজে প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় হয়ে সাধারণ আবাসিক শিক্ষার্থীরা গত ২১ এপ্রিল কলেজ অধ্যক্ষের কাছে ঝুমুরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে। লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় আরও ক্ষিপ্ত হয় ঝুমুর। এ ঘটনায় সব শেষ ২২ এপ্রিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের কাছে দ্বিতীয় দফায় ঝুমুরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয় এবং তাকে হল থেকে বহিস্কারের দাবি জানায়। এ ঘটনা নিয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়ে ঝুমুর। এক পর্যায়ে অন্যান্য আবাসিক শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় ঝুমুরকে বেদম মারধর করে এবং তার বিছানাপত্র পুড়িয়ে দেয়। ওই ঘটনার পর থেকে ঝুমুর হলের বাইরে রয়েছে।
এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কমিটির কাজে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠে দুই পক্ষের বিরুদ্ধে। এ কারণে কর্তৃপক্ষ ঝুমুরকে হলে ফিরতে নিষেধ করে। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে কর্তৃপক্ষ প্রতিপক্ষের আবাসিক ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসি, রহিমা আফরোজ ইভা, ফাতিমা শিমু, শাকিলা আক্তার, তানজিলা আক্তার মিষ্টি ও শারমিন আক্তারকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়।
ফাতেমা শিমু জানান, তদন্তের স্বার্থে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের আদেশ মেনে নিয়েছেন।
তানজিলা আক্তার মিষ্টি জানান, অধ্যক্ষ তদন্তের স্বার্থে তাদের ছয় জনকে কয়েক দিনের জন্য হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তারা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য হল ছেড়ে দিয়েছেন।
বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শফিকুর রহমান সিকদার জানান, শিক্ষক কাউন্সিলের সভায় ওই মারামারির ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে জড়িতদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।