ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলার লালমোহনে মন্দিরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মানসিক প্রতিবন্ধী যুবক জয়কে নির্যাতনের একটি ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। পরে ভিডিও দেখে বৃহস্পতিবার রাতে সেই প্রতিবন্ধী জয়কে উদ্ধার করেছে পুলিশ। লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে দেওয়া হয়েছে চিকিৎসা।
পরে এ ঘটনায় মারধর করার অভিযোগে তাপস চন্দ্র মৃধাকে (৩০) নির্যাতনের আলামতসহ আটক করে লালমোহন থানার পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার জয়ের বাবা শ্যামল মিস্ত্রি জানান, প্রতিবেশী তাপসের বাড়িতে তাঁর আত্মীয় বেড়াতে এলে তাঁকে থাপ্পড় মারে জয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাপস ও অসীম বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তাঁর ছেলেকে মন্দিরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে সেদিন বিকেলে বাড়ি আসেন। নির্যাতনকারীদের ভয়ে তিনি তাঁর প্রতিবন্ধী ছেলেকে বাড়ি থেকে নিয়ে চিকিৎসাও করাতে পারেননি। ফেসবুকে ভিডিও দেওয়ার কারণে পুলিশ খবর পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায় জয়কে।
শ্যামল মিস্ত্রি আরও জানান, তিন সন্তানের মধ্যে বড় জয়। সে ১০ বছর বয়স থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী। তাকে মানসিক চিকিৎসার জন্য পাবনাসহ বিভিন্ন স্থানে নেওয়া হয়েছে। তবু জয়ের কোনো উন্নতি হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা জোটন বিশ্বাস জানান, শ্যামল মিস্ত্রি পেশায় একজন সেলুন ব্যবসায়ী। উপজেলার পাঙ্গাসিয়া বাজারে তাঁর সেলুন আছে। জয়কে এর আগেও তাপসরা বেশ কয়েকবার এ রকম মেরেছে। তবে এবারের ঘটনা বেশ অমানবিক হওয়ায় ভিডিও করে কেউ একজন এটি ভাইরাল করে দেয়। মারধরের সময় তাপসের ওই আত্মীয়ও সেখানে ছিল।
এ ব্যাপারে লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ভিডিওটি দেখে ওই এলাকায় গিয়ে নির্যাতনের শিকার যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে। মারধর করা তাপসকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। শেষ হলে মূল ঘটনা জানা যাবে।
প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ১৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড কর্তারহাট বাজার এলাকায় রাঁধা গোবিন্দ মন্দিরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে এক যুবককে দুজন মিলে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারছে। এ সময় যুবককে আর্তচিৎকার করতে শোনা যায়।