দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপণসহ বিএনপির সাবেক এবং বর্তমান ১৯ নেতাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি বহিস্কৃত এসব নেতাদের গণতন্ত্র উদ্ধারের ইতিহাসে বেইমান, বিশ্বাসঘাতক ও মীরজাফর হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে।দলীয় প্যাডে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পৃথক ১৯টি বহিস্কার আদেশপত্রে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বহিস্কৃতদের মধ্যে বরিশাল সিটি নির্বাচনে ‘টেবিল ঘড়ি’ প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য এবং মরহুম বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামালের পুত্র কামরুল আহসান রুপণ।
এছাড়া বহিস্কৃত অন্য নেতারা হলেন- কাউন্সিলর প্রার্থী মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান টিপু, শাহ্ আমিনুল ইসলাম আমিন, হারুন অর রশিদ, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম হাওলাদার, মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-শিশু বিষয়ক সম্পাদক মো. ইউনুস মিয়া, সিদ্দিকুর রহমান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউল হক মাসুম, একই ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী মনিরুল ইসলাম, কাজী মোহাম্মদ শাহীন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জোবায়ের আবদুল্লাহ সাদী, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদ উদ্দিন হাওলাদার ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে খায়রুল মামুন।
এছাড়া সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জেসমীন সামাদ, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিনা বেগম, রাশিদা পারভীন ও জাহানারা বেগম।
বহিস্কার আদেশে বলা হয়েছে, ‘আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিতব্য বরিশাল সিটি করপোরেশন এর প্রহসনের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আপদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে গত ২ জুন ২০২৩ তারিখে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়।
‘কারণ দর্শানো নোটিশের প্রেক্ষিতে আপনার দেয়া জবাব সন্তোষজনক নয়। আপনার নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গত ১৫ বছর ধরে ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা গুম-খুন ও সরকারি পৈশাচিক নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তাদের পরিবারসহ গণতন্ত্রকামী জনগোষ্ঠীর আকাক্সক্ষার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা।
সুতরাং দলীয় গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে আপনাকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হলো। গণতন্ত্র উদ্ধারের ইতিহাসে আপনার নাম একজন বেইমান, বিশ্বাসঘাতক ও মীরজাফর হিসেবে উচ্চারিত হবে।’
এ প্রসঙ্গে বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মেয়র প্রার্থী কামরুল হাসান রুপণ বলেন, ‘দল যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই করেছে। আমি এই সিদ্ধান্তকে সম্মান এবং সাধুবাদ জানাই। তবে আমি বরিশাল মহানগর বিএনপির ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি গত ১৫ বছর গণতন্ত্রের যে আন্দোলন করছে, আমার নির্বাচনে অংশ নেয়া সেই আন্দোলনের একটি অংশ। আমার বিজয়ের মধ্যে দিয়ে সেই আন্দোলন আরও বেগবান হবে। বিএনপি আমার প্রাণের সংগঠন। বিএনপিতে আছি, ছিলাম এবং থাকবো।