বিশ্বকাপ ফুটবলের শুরু হতে আর মাত্র বাকি ৩১ দিন। এর পরই রাশিয়ায় শুরু হবে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ।’ এবারের বিশ্বকাপে রঙ ছড়াবেন মেসি, নেইমার, রোনালদোরা। কিন্তু ৪ বারের বিশ্বকাপ জয়ী ইতালিকে এবার দর্শক হয়েই থাকতে হচ্ছে। কারণ গত নভেম্বরেই প্লে-অফে সুইডেনের কাছে হেরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে ইতালিকে।
তবে আগামী ১৪ জুন রাশিয়ায় শুরু হতে যাওয়া ২০১৮ বিশ্বকাপে ইতালি না থাকলেও বিশ্বকাপ ঠিকই ফিরবে ইতালিতে! ইতালিয়ানদের হাতের ছোঁয়ায় যে যুগ যুগ ধরে অমলিন বিশ্বকাপ ট্রফির সোনালি ঝিলিক। প্রতি চার বছর অন্তর মিলানের উপশহর পাদের্নো দুগনানোয় অবস্থিত একটি ইতালিয়ান প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো হয় বিশ্বকাপের আসল ট্রফি। সেখানে ঘঁষেমেজে ট্রফির উজ্জ্বলতা ঠিক রাখা হয়।
১৯৭০ সালে তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জিতে জুলে রিমে ট্রফি নিজেদের করে নিয়েছিল ব্রাজিল। এরপর ১৯৭১ সালে ইতালির জিডিই বার্তোনি নামের এই প্রতিষ্ঠানেই ফিফা বিশ্বকাপের বর্তমান ট্রফি তৈরি করা হয়। ৩৮ সেন্টিমিটার উঁচু ও ছয় কেজি ওজনের সোনার ট্রফি নিয়ে প্রতিবার বিশ্বকাপজয়ী দল উৎসব করলেও স্থায়ীভাবে তাদের দেয়া হয় মূল ট্রফির রেপ্লিকা। মূল ট্রফি ফিফা সযত্নে সংরক্ষণ করলেও বিশ্ব ভ্রমণের সময় প্রতিবারই ট্রফির কিছু ক্ষতি হয়।
নতুন পালিশ ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য বিশ্বকাপ শেষে মূল ট্রফি বার্তোনির কারখানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে আটজন বিশেষজ্ঞ কারিগরের হাতে নবযৌবন পায় ট্রফি। চ্যাম্পিয়ন দলকে দেয়া রেপ্লিকা ট্রফিও তৈরি করেন তারা।
এবারও বিশ্বকাপ শেষে ট্রফি ফিরবে তার আঁতুরঘরে। কিন্তু ইতালির ফুটবলপ্রেমীদের দীর্ঘশ্বাস তাতে কমবে না। ইতালিকে ছাড়া বিশ্বকাপ আগেই রং হারিয়েছে তাদের কাছে। ইতালির কিংবদন্তি গোলকিপার দিনো জফও আছেন সেই দলে।
তার নেতৃত্বেই ১৯৮২ বিশ্বকাপ জিতেছিল ইতালি। ৪০ বছর বয়সে দেশকে বিশ্বকাপ ট্রফি এনে জফের কাছে ইতালিবিহীন বিশ্বকাপের কোনো আবেদনই নেই, ‘যেসব দল এবার বিশ্বকাপে খেলছে, তাদের অনেকেরই আমাদের মতো ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ট্রফি নেই। সেখানে ইতালির না থাকাটা খুবই বেদনাদায়ক। ইতালির জন্য দর্শক হয়ে বিশ্বকাপ দেখাটা কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। এটাকে সত্যিকারের বিশ্বকাপই মনে হচ্ছে না।
ইতালির মানুষ ফুটবল ভালোবাসে। এরপরও তারা বিশ্বকাপ দেখবে। কিন্তু চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা যখন ঘরে বসে থাকবে তখন অখ্যাত কোনো দলের খেলা দেখাটা খুবই কঠিন।’