তিন বছর ধরে প্লাস্টিকের ব্যাংকটিতে টাকা জমাচ্ছিল মিম। সেই টাকা দিয়ে কিনবে শখের সাইকেল। তবে দেশপ্রেম যেন শখপূরণের চেয়েও বড়। তাই সেই ব্যাংকভর্তি টাকা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) হাজির হয়েছে ছোট্ট মিম। দীর্ঘদিনের সঞ্চয়ের টাকা দান করে প্রমাণ করল ‘মানুষ মানুষের জন্য’।
মিমের সঙ্গে তোলা একটি ছবি নিজের ফেসবুক ওয়ালে প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আশরেফা। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘আবারও তিন বছরের সঞ্চয় নিয়ে আসলো আরেক বাচ্চা। ওর নাম মিম। সাইকেল কেনার জন্য সঞ্চয় করছিল।’
মিমের আগেও আরও দুই শিশু ব্যাংকভর্তি জমানো টাকা দিয়ে গেছে বন্যার্তদের সহায়তায়। আশরেফা অন্য একটি পোস্টে দুটি ব্যাংকের ছবি দিয়ে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘একটা সাত-আট বছরের বাচ্চার তিন বছর ধরে জমানো টাকা সবুজ ব্যাংকটার মধ্যে। কি হাসিমুখে ব্যাংকটা দিয়ে গেল আমার হাতে! অথচ টাকাগুলো হয়তো কত শখ করে জমিয়েছিল! যখন টাকার গুরুত্ব ভালোভাবে বুঝতে শেখেনি তখনই জমানো শুরু করেছিল টাকাটা। আজকে বন্যার্তদের জন্য দিয়ে গেল।
লাল রঙের ব্যাংকটা দিয়ে গেল অন্য আরেক বাচ্চা। ওর মায়ের ওমরাহ করার জন্য জমানো টাকা। এন্ট্রি করার জন্য জিজ্ঞেস করলাম কত টাকা আছে। দুইজনই উত্তর দিলো যে জানেন না। আসলে পরিমাণটা আমাদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ না। যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো এই এগিয়ে আসা এবং এগিয়ে দেওয়ার বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে ঠেকিয়ে রাখার সাধ্য কারো নাই।
“নতুন প্রজন্ম,নতুন বাংলাদেশ”।’
এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবি জুবাইর ফেসবুকে লিখেছেন, যা কিছু সুন্দর, তিন বছর ধরে প্লাস্টিকের ব্যাংকে জমানো সব টাকা নিয়ে টিএসসিতে হাজির ৭ বছরের ইহান।
বৃহস্পতিবার থেকেই টিএসসিতে বন্যার্তদের সহায়তার জন্য গণত্রাণ সংগ্রহ করছে শিক্ষার্থীরা। এদিন মোট সংগ্রহ করা হয়েছে ২৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। আর শুক্রবার বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত সংগৃহীত ত্রাণের পরিমাণ ৩৯ লাখ টাকা।