প্রতি টন পেঁয়াজের সর্বনিম্ন রপ্তানি মূল্য ৫৫০ ডলারের যে শর্ত তা প্রত্যাহার করেছে ভারত। পাশাপাশি রপ্তানির ওপর আরোপ করা ৪০ শতাংশ শুল্ক অর্ধেকে নামিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। শুক্রবার দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড শর্ত বাতিলের এই আদেশ জারি করেছে। এতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা এখন যেকোনো দামে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে পারবেন। শনিবার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে এমন খবরে শনিবার দেশের খুচরা বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমেছে। আর এক সপ্তাহের মধ্যে দাম আরও কমবে বলে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ভারত একসময় পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে চলতি বছরের মে মাসে রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে পেঁয়াজের সর্বনিম্ন রপ্তানিমূল্য ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়। এছাড়া দেশটির সরকার রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।
এদিকে ভারতের এমন সিদ্ধান্তের খবরে দেশে প্রত্যেকটি স্থলবন্দরে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর খুচরা বাজারেও। এক দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজেরে দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমে ১০০-১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা একদিন আগেও শুক্রবার ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ আগের মতো ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর সর্ব বৃহৎ পাইকারি আড়ৎ শ্যামবাজারের পেঁয়াজ আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ী শংকর চন্দ্র ঘোষ যুগান্তরকে বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে রপ্তানিমূল্য ৫৫০ ডলারের যে শর্ত ছিল তা প্রত্যাহারের খবর আমরা পেয়েছি। পাশাপাশি শুল্ক কমানোর খবরও আমরা পেয়েছি। এখন দেখার বিষয় দেশটির ব্যবসায়ীরা প্রতি টন কত টাকায় আমাদের কাছে রপ্তানিমূল্য দেয়। সব বিবেচনায় আমরা সাড়া দেব। তবে ইতোমধ্যে এই খবরে দেশে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। আর কম দামের পেঁয়াজ দেশের বাজারে আসতে শুরু করলে সপ্তাহখানেকের মধ্যে দাম আরও কমতে থাকবে। অন্যদিকে শনিবার হিলির স্থানীয় বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের আমদানি করা নাসিক ও ইন্দোর পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৪-৮৬ টাকা। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা। যা এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পেঁয়াজ রপ্তানিকারী দেশ। বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, নেপাল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারতীয় পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেও রপ্তানি হয় ভারতীয় পেঁয়াজ। গত বছরের ডিসেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের দামে ধস নামে। তবে বিশ্ববাজারে হু হু করে বাড়ে দাম। যার প্রভার বাংলাদেশের বাজারেও পড়ে। সে সময় থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে দাম।