29 C
Dhaka
এপ্রিল ১৯, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জেলার সংবাদ

বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে ইজারা বহির্ভূতভাবে শেরপুর সীমান্তে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

শেরপুর সীমান্তে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চোরাকারবারীরা অবৈধভাবে মুল্যবান লাল বালু উত্তোলন,মাদক পাচার করছে।ভয়ংকর এসব অপরাধিদের ভয়ে সাংবাদিকরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে পাচ্ছে না।

দায়িত্ব পালন করতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর চোরাকারবারীরা চড়াও হচ্ছে।স্থানীয়দের অভিযোগ বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রশাসনের লোকজন অবৈধ বালু উত্তোলন কারীদের সাথে জড়িত।

উপজেলা বিএনপি বলছে চোরাকারবারীদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। জেলা প্রশাসক বলছেন প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির কোন কমিটিতে নাম নেই আবার অনেকে সাবেক হয়েছেন এরাই এখন বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন,সীমান্তের উপারে ভারত থেকে মদ,ফেনসিডিল এনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পাচার করে বিএনপির বারটা বাজাচ্ছেন।

শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্ত মেঘাদল, বাবলাকুনা,হারিয়াকোনা গ্রামের মানুষ জানায়, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী পরিচয়ে শেরপুর গাড়ো পাহাড়ের সীমান্ত এলাকার চোরাকারবারীরা সক্রিয় হয়ে উঠে।

প্রতি রাতেই লাল বালুর ট্রাকে করে ভারতীয় মদ, ফেনসিডিল এবং অন্যান্য মাদক পাচার করে যাচ্ছে। ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

চোরাকারবারীরা কাউকে টাকা দিয়ে কাউকে ভয় ভীতি দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে প্রতিদিন লাখলাখ টাকার সরকারি সম্পদ লুট করে যাচ্ছে। মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

কর্নজোড়া পাচ মেঘাদল গ্রামের উজ্জল বলেন, এই সীমান্ত এলাকায় অনেকেই চোরাকারবাড়ীর সাথে জড়িত।

তবে বর্তমানে কনর্জোড়া গ্রামের আজিজুল হক মেম্বারের ছেলে মাসুদ ৫ আগস্ট এর পর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে যাচ্ছে। তারা প্রশাসনকে মেনেস করে এটা করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রীবরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন নেতা বলেন,সিঙ্গাবরুনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আবু রায়হান বাবুলের ছএছায়ায় মাসুদ ও তার বাহিনী সীমান্ত অঞ্চলে অবৈধ কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। বদনাম হচ্ছে পুরা বিএনপি’র। জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় কারো কাছে আমরা বিচারও দিতে পারছি না।

মাসুদ বলেন, আমি কোন অপরাধের সাথে জড়িত নই।১৭ বছর আওয়ামীলীগের সময়ে ১৭টি মামলা খেয়েছি।জেল জুলুম খেটেছি।তিনি নিজেকে সাবেক ছাত্রদল ও বর্তমান স্থানীয় যুবদল নেতা দাবী করেছেন।

সাবেক বিএনপি নেতা আবু রায়হান বাবুল বলেন, মাসুদের সাথে বালু উত্তলনের ব্যাপারে আমার কোন সম্পর্ক নেই। তবে তার সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। এবং জেলা বিএনপির সমস্ত নেতাকর্মীদের সাথেই আমার একটা সুসম্পর্ক আছে।

আরো জানা যায়, ২৩ জানুয়ারী একদল সাংবাদিককে স্থানীয় বালু দস্যু মাসুদ ও বাবুল চেয়ারম্যার বাহীনির কবলে পড়ে ।এনিয়ে ১৫ জনের নামিও এবং আরো অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে শ্রীবরদী থানায় মামলা (মামলা নং ১৮) দায়ের করা হয়েছে।এদিকে এ ঘটনায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শেরপুর পুলিশ সুপার।

হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলো শেরপুর প্রেস ক্লাবের কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ, সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের মাসুদ হাসান বাদল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দেশ রুপান্তরের শফিউল আলম সম্রাট, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক মনিরুজ্জামান রিপন।

প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদল বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিলো শ্রীবরদী সীমান্তে রাত নামলেই অবৈধ বালুর গাড়িতে মাদক পাচার হয় এবং আমরা সেখানে গিয়ে এটার সত্যতা পেয়েছি এবং ভিডিও ধারন করেছি।

সীমান্ত এলাকার গডফাদার বালু দস্যু মাসুদ ও তার বাহিনী প্রতিরাতেই মেঘালয় সীমান্ত ছুঁইছুঁই এলাকা থেকে ইজারাবহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন, মদ, ফেনসিডিল পাচার করে থাকে।

ট্রাকে মাদক পাচারকালীন সময়ে ভিডিও ধারন করলে চোরাকারবারিদের ক্রোধে শিকার হতে হয় ।
রাতে সীমান্তে পাচ মেঘাদল গ্রামে ঢাকা কেরানীগঞ্জ থেকে বালু নিতে আসা একজন ড্রাইভার বলেন, আমাদের চারটি ট্রাক হালুয়াঘাট সার আনলোড করে এখানে এসেছি লাল বালু নিতে।আমাদের মহাজন মাসুদের নাম্বার দিয়েছে তার সাথে যোগাযোগ করার জন্য।

শ্রীবরর্দী পৌর বিএনপি সভাপতি সাবেক ছাত্রদল নেতা ফজলুল হক অকুল চৌধুরি ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম দুলাল বলেছেন, ওরা বালু ও মাদক ব্যবসায়ি।বিএনপির সাথে ওদের কোন সম্পর্ক ছিলও না এখনও নেই।আমরা বারবার প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করেছি।

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার জাহিদ বলেন, মাসুদসহ অন্যান্য অপরাধীদের নামে আমার থানায় ২৩ জানুয়ারী রাতে একটি মামলা হয়েছে এবং আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।মাসুদের নামে কোন রাজনৈতিক মামলা ছিলো কি না সেটা দেখতে হবে। তবে মাসুদ গংদের বিরুদ্ধে বালু ও নেশা পাচারের কথা শুনেছি।আগে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

শেরপুর জেলা পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন,সাংবাদিকদের অবাদ সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে চোরাকারবারীররা বাধা সৃষ্টি করেছে।কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।তারা যে দলেরই হক।

শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, শ্রীবরদী উপজেলার সীমন্ত এলাকায় বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয়নি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে মামলা জেল জরিমানা করা হচ্ছে। প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা বালু উত্তোলন সাথে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে এই কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একজন কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় মামুনুল-হাসনাত-সারজিস

banglarmukh official

অটোরিকশায় ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ, ভিডিও ভাইরাল

banglarmukh official

বগুড়ায় স্কুলছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

banglarmukh official

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশ হাইকোর্টের

banglarmukh official

বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার শিশু, ভগ্নিপতি ও শ্বশুর আটক

banglarmukh official