গত বছরের জানুয়ারী মাসে ধর্ষণের শিকার হন অঞ্জনা (২৫) নামের এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। পিতা- অতুল চন্দ্র শিকদার, সাং- কাউনিয়া ১ম গলি দিঘীর দক্ষিণ পশ্চিম কোনায়, থানা- কাউনিয়া, বিএমপি, বরিশাল কে বা কাহারা ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে উক্ত অঞ্জনা গর্ভবতী হয়। তাহার অন্তঃসত্বার বয়স ২২ সপ্তাহ ছিল।
উক্ত ঘটনা কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুল ইসলাম পিপিএম জানা মাত্রই ভিকটিমকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। ভিকটিমের বাবাকে খবর দিয়েথানায় এনে অভিযোগ নিয়ে বাদী করে কাউনিয়া থানার মামলা নং-০২, তারিখ- ০২/১০/১৭ ইং, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১) রুজু করেন। নিয়মানুযায়ী অনুযায়ী ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা করানো হয়। ভিকটিম অঞ্জনা জন্মগত ভাবে একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধি। তাহার এবং তাহার গর্ভের সন্তানের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিজ্ঞ আদালতের অনুমতি নিয়ে ভিকটিম অঞ্জনাকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অধীন সেইফ হোমে রাখা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভিকটিম ১ টি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ভূতপূর্ব কমিশনার জনাব এসএম রুহুল আমীন তার নাম রাখেন সপ্তর্শী।
মামলার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ভিকটিম কখোনই বলে নাই যে, কে তাকে ধর্ষন করেছিল। এরকম একটি প্রতিকূল পরিবেশ থেকে সম্পূর্ণ নিজের মেধা বুদ্ধি পেশাদারিত্বের কারণে এবং ঊর্ধক্ষতন পুলিশ কর্মকর্তাগণের সার্বক্ষনিক নিবিড় পর্যবেক্ষন ও দিক নির্দেশনার ফলে একজন মাত্র সন্দিগ্ধ ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সেপোর্দ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে উক্ত সন্দিগ্ধ ব্যাক্তির ডিএনএ নমুনা নিয়ে ভিকটিম অঞ্জনার কন্যা সন্তান সপ্তর্শীর সংঙ্গে ডিএনএ তুলানামূলক পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা শেষে ডিএনএ এনালিষ্ট মতামত প্রদান করেন যে, ডিএনএ পরীক্ষায় সুদৃঢ় ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। গ্রেফতারকৃত সন্ধিগ্ধ আসামী মিঠুন বাড়ৈ, পিতা- মৃত পরেশ বাড়ৈ, সাং- কাউনিয়া প্রধান সড়ক, সিলেট ফ্যাক্টরী, খ্রিষ্টান কলোনী, থানা- কাউনিয়া, বিএমপি, বরিশাল ভিকটিম অঞ্জনার কন্যা সন্তান সপ্তর্শীর জৈবিক পিতা বা জন্মদাতা। অর্থাৎ আসামী মিঠুন বাড়ৈ এর ধর্ষণের ফলেই ভিকটিম অঞ্জনা গর্ভবতী হয় এবং কণ্যা সন্তান সপ্তর্শীর জন্ম দেয়। উক্ত মামলার সবচেয়ে উল্লেখ যোগ্য সাফল্য হলো- মামলার এজাহারে কোন আসামীর নাম নাই। অধিকন্তু মামলার ভিকটিমও বলে না কে তাকে ধর্ষণ করেছিল। এমনিই একটি সম্পূর্ন কঠিন অবস্থা থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই/সেলিম রেজা এর আন্তরিক প্রচেষ্টা ও পেশাদারিত্ব মনোভাবের কারণে এবং অফিসার ইনচার্জ মোঃ নুরুল ইসলাম পিপিএম এবং উধর্ক্ষতন সকল অফিসারদের নিবিড় তদারকির ও সম্পূর্ণ বিজ্ঞান ভিক্তিক তদন্তের কারণে মামলা তদন্তে এতবড় সাফল্য হয়েছে। এ জাতীয় ঘটনায় এরকম সাফল্য খুব বিরল। বিষয়টি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য এবং শিক্ষনীয়। মামলাটি তদন্ত শেষে কাউনিয়া থানার অভিযোগপত্র নং-১৩৬, তারিখ- ৩১/৫/২০১৮ ইং, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১) বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হইয়াছে। মামলায় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো কোন লোক অযথা এই মামলায় হয়রানী হয় নাই। অথচ এ ধরনের মামলায় হয়রানী হওয়ার মত সুযোগ ছিল। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা এতসুক্ষ এবং আন্তরিকতার সহিত তদন্ত করেছেন ফলে একমাত্র সন্দিগ্ধ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার পরই মামলার ঘটনার প্রমাণিত হয়ে যায়। বিষয়টি খুবই প্রশংসার যোগ্য এবং সফলতার দাবী রাখে।