প্রতিবেশী দেশের ফুটবল সমর্থক হওয়ার কোনো কারণ নেই ডিয়েগো ম্যারাডোনার। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে প্রিয় দলের হতাশাজনক বিদায়ের পর মাঠের ফুটবলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সেলেসাওদেরই হট ফেভারিট মনে করছেন এই ফুটবল কিংবদন্তি।
আর্জেন্টিনা যত দিন বিশ্বকাপে ছিল, তত দিন সমান আকর্ষক ছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। মাঠে তাঁর উচ্ছল উপস্থিতি মাতিয়েছে গোটা বিশ্বকেই। লিওনেল মেসিরা এবারের আসর থেকে বিদায় নিলেও ‘উপস্থিত’ আছেন তাঁদের পূর্বসূরি ম্যারাডোনা। ভেনিজুয়েলার টিভি টেলেসুরে নিয়মিত অনুষ্ঠান করছেন তিনি। মেক্সিকোর বিপক্ষে ব্রাজিলের জয় দেখার পর ম্যারাডোনার মন্তব্য, ‘ব্রাজিলের এই দলটা খুব শক্তিশালী। আমার তো মনে হচ্ছে ওরাই শিরোপা জিতবে। ট্রফি বড় দলই জেতে। তিতেকে (ব্রাজিলের কোচ) আমার খুব পছন্দ, ব্রাজিল দলটাকে কী দারুণ গুছিয়েছে। মেক্সিকোর এই হারে মুষড়ে পড়ার কোনো কারণ নেই।’ তবে ব্রাজিলের মহাতারকা নেইমারের ‘অভিনয়’ বিরক্ত করেছে ম্যারাডোনাকে, ‘তুমি (নেইমার) হয় আমাদের কাঁদাও নয়তো হাসাও—যেকোনো একটা করো। তুমি মাঠে পড়ে গড়াগড়ি খেলে আমরা উদ্বেগে কেঁপে উঠি। কিন্তু একটু পরই তুমি যখন স্বাভাবিক দৌড় দাও, তখন হাসি পায়। এমন নাটকের মানে কী?’
তবে সর্বান্তঃকরণে তিনি তো আর্জেন্টাইনই। তাই এত দিন পরও টিভি শোতে ঘুরে-ফিরে আসে আলসেবেলিস্তেদের বিদায়ের শোক। মাঠে বসে আর্জেন্টিনার প্রতিটি খেলা দেখা ম্যারাডোনার আক্ষেপ, ‘ওরা (নিজ দেশের সমালোচকরা) ভাবে আমি হয়তো খুব আনন্দে আছি। কিন্তু আমার মনের কষ্ট তো কাউকে দেখাতে পারি না। ঈশ্বর যদি আমাকে মাঠে নামার শক্তি ফিরিয়ে দিতেন…৫৭ বছর বয়সে এসে চোখের সামনে এ কোন আর্জেন্টিনাকে দেখছি? আমাদের জাতীয় দল এমন একটা মানের, যে দলটাকে আমি টুর্নামেন্টের সেরা বলে মনে করি না। এটা যে আমার কতটা পীড়া দেয়, বলে বোঝাতে পারব না।’
ম্যারাডোনার এই কষ্ট হয়তো লাঘব হবে যদি বিশ্বমঞ্চে আবার দোর্দণ্ডপ্রতাপে ফেরে তাঁর আর্জেন্টিনা। চার বছর পরে অনুষ্ঠেয় কাতার বিশ্বকাপের জন্য সে রকম একটি দল গড়ার কাজে নিজে থেকে হাত বাড়িয়েও দিয়েছেন ম্যারাডোনা, ‘আর্জেন্টিনা ফুটবলের উন্নতির জন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করতে আমি রাজি, ফ্রি করে দেব।’ টেলেসুর